blog

আম উৎপাদনে বছরব্যাপী করণীয়:

আম বাংলাদেশে একটি বাণিজ্যিক ফল। অধিক ফলন ও গুণগতমানসম্পন্ন আম উৎপাদনের জন্য নিম্নলিখিত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন:

 মুকুল আসার পর (জানুয়ারি - মার্চ)

 মুকুল বের হওয়ার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে হপার পোকা দমনে অনুমোদিত কীটনাশক ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগ দমনে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক একত্রে মিশিয়ে প্রথমবার ও এক মাস পর দ্বিতীয়বার স্প্রে করতে হবে।

ফুল সম্পূর্ণ ফোটার পর থেকে শুরু করে ১৫ দিন পর পর ৪ বার পরিবর্তিত বেসিন পদ্ধতিতে সেচ দিতে হবে। এ সময় বৃষ্টি হলে মাটির আর্দ্রতা বুঝে সেচ দিতে হবে।

ফল ধারণের পর (ফেব্রুয়ারি - মে)

 আমের আকার মটরদানার মতো হলে অবশিষ্ট অর্ধেক ইউরিয়া ও এমওপি সার সমান দুইভাগে ভাগ করে এক ভাগ প্রয়োগ করতে হবে ।অবশিষ্ট সার এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োগ করতে হবে।

ফল ঝরা রোধে প্রতি লিটার পানিতে ২০ গ্রাম ইউরিয়া মিশিয়ে ফল মটরদানা অবস্থায় একবার এবং মার্বেল আকৃতির হলে দ্বিতীয় বার স্প্রে করতে হবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে আমের উইভিল ও ফলছিদ্রকারী পোকা দমনের জন্য অনুমোদিত কীটনাশক মধ্য মার্চ হতে ১৫ দিন পর পর ২/৩ বার স্প্রে করতে হবে। পরিপক্বতার সময় মাছি পোকা দমনের জন্য ফল সংগ্রহের এক মাস পূর্বে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ বা ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে ।

ফল সংগ্রহ (মে - সেপ্টেম্বর)

 আম পরিপক্ক হলে গাছ থেকে এমনভাবে পাড়তে হবে যেন কোনো আঘাত না লাগে।

অল্প (১ - ২ ইঞ্চি) বোটাসহ আম সংগ্রহ করতে হবে এবং আম কিছুক্ষণ উপুড় করে আঠা ঝরিয়ে নিতে হবে।

আম পাড়ার ১৫/২০ দিন পূর্বে আম গাছে কোনো প্রকার কীটনাশক বা ছত্রাকনাশক স্প্রে করা যাবে না।

আম পাড়ার পর ৫৫ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রার গরম পানিতে ৫ মিনিট ডুবিয়ে ছায়াযুক্ত স্থানে শুকিয়ে নিতে।

মুকুল আসার আগে (জুন - ডিসেম্বর)

 বর্ষার শেষে এবং ফল সংগ্রহের পর গাছের শুকনো, মরা, রোগাক্রান্ত ও দুর্বল ডালপালা ও পরগাছা কেটে গাছ পরিষ্কার করতে হবে এবং সে স্থানে বোর্দো পেস্ট বা কপার জাতীয় ছত্রাকনাশকের প্রলেপ দিতে হবে।

সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ - ৩০ তারিখের মধ্যে গাছের বয়স অনুসারে নির্ধারিত মাত্রায় প্রথম কিস্তির সার (জৈবসার, টি এসপি, জিপসাম, জিংক সালফেট এবং বরিক এসিডের সম্পূর্ণ এবং ইউরিয়া ও এমওপি সারের অর্ধেক পরিমাণ) প্রয়োগ করতে হবে।

গাছের গোড়া হতে কমপক্ষে ১ - ১ .৫ মিটার বাদ দিয়ে দুপুর বেলা যে পর্যন্ত ছায়া পড়ে সে স্থানে সার ছিটিয়ে হালকাভাবে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে একটি হালকা সেচ দিতে হবে।

অক্টোবর মাস হতে ফল আসার আগ পর্যন্ত গাছে সার ও সেচ দেয়া যাবে না। এ সময় গাছের গোড়া আগাছা মুক্ত রাখতে হবে।

0 Comment

আপনি কি সন্তুষ্ট ?

Leave a Comment